ছোটবেলায় তিন গোয়েন্দার "ভীষণ অরণ্য" বই পড়তে গিয়ে রোমাঞ্চিত হয়েছিলাম। আমাজনের জঙ্গল নিয়ে লেখা বইটি খুব চমৎকার লেগেছিল। তখন থেকেই আগ্রহ ছিল আমাজনের ব্যাপারে। তাই সুযোগ পেয়ে একটা পোষ্ট দিয়ে ফেললাম আমাজনকে নিয়ে।
আমাজন বা আমাজন রেইনফরেস্ট (The Amazon rainforest) এর কথা বলতে গেলেই একটি কথা কয়েকবার বলতে হবে; তা হল--
"পৃথিবীর সবচে বড়..."। যেমনঃ পৃথিবীর সবচে বড় বন এটি, পৃথিবীর সবচে বড় রিভার বেসিন (নদীর অববাহিকা) এই আমাজনে, পৃথিবীর সবচে বড় আয়তনের নদী এই অঞ্চলে.....ইত্যাদি।
আমাজন বন হল আমাজন বেসিনে (আমাজন নদীর অববাহিকায়) অবস্থিত পৃথিবীর সবচে বড় নিরক্ষীয় বন (আয়তন সাড়ে ৫ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটার বা ৩.৪ মিলিয়ন বর্গ মাইল), যা দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের উত্তরভাগে অবস্থিত ৯টি দেশের অন্তর্ভুক্ত। দেশগুলো হলঃ ব্রাজিল (আমাজনের মোট আয়তনের ৬০% ব্রাজিলে), পেরু (১৩%), বলিভিয়া, ইকুয়েডর, কলম্বিয়া, ভেনিজুয়েলা, সুরিনাম, ফ্রেঞ্চ গায়ানা এবং গায়ানা। দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের মোট আয়তনের ৪০% এই বনের দখলে। আমাজন বন অত্যন্ত দুর্গম। তবে দ্ক্ষ গাইড সহ নদী পথে ভ্রমন এই নিরক্ষীয় বনের প্রাকৃতিক বিস্ময় দেখার সবচে ভাল উপায়।
ইতিহাস--যেটুকু না জানলেই নয়ঃ
প্রাচিনকাল থেকেই অভিযাত্রীরা আমাজনে যাত্রা করে মূলত স্বর্ণ, রৌপ্য এবং ধন-রত্নের খোঁজে। পর্তুগীজ অভিযাত্রীরা বিশ্বাস করত, বিশাল এ বনের মধ্যেই কোথাও লুকিয়ে আছে "এলডোরাডো" (Eldorado) নামক এক গুপ্ত শহর যা পুরোপুরি সোনার তৈরি। এই ভ্রান্ত ধারণাটি এসেছে গ্রীক পৌরাণিক গল্প থেকে যেখানে বলা হয়েছে যে "এলডোরাডো" নামক সোনায় মোড়ানো শহরটি পাহারা দেয় এক শ্রেণীর বিশেষ নারী যোদ্ধারা; যাদেরকে গল্পে "আমাজন" নামে অভিহিত করা হয়েছে। পর্তুগীজ, স্প্যানিশ এবং ফ্রেঞ্চ অভিযাত্রীরা প্রতিযোগীতায় নামে এই "এলডোরাডো" শহর আবিষ্কারের জন্য। কিন্তু কেউ এই কাল্পনিক শহরের সন্ধান পায়নি। শহরের সন্ধান না পেলেও স্থায়ী হয়ে যায় সেই গ্রীক নারী যোদ্ধাদের নাম। তাদের নামানুসারেই এই জঙ্গলের নাম হয় "আমাজন" জঙ্গল।
•|• দেখুন আমাজানের রহস্য এবং এর মেয়ে যোদ্ধাদের ! •|•
|
•|• দেখুন আমাজানের রহস্য এবং এর মেয়ে যোদ্ধাদের ! •|• |
☀বিশ্বের বৃহত্তম নদী আমাজনের নামকরণের পেছনে আছে এক মজার ইতিহাস । ১৫৩৯ সালে ইকুয়েডরের কুইটো (Quito) শহরের একদল স্পেনীয় অভিযাত্রীকে বলা হল বড় নদী ধরে পূর্বদিকের জঙ্গলে কি আছে তা খুঁজে দেখার জন্য । এই দলের নেতা ছিলেন ইতিপূর্বে পেরু দখলকারী দশের নেতা বিখ্যাত সেনাপতি ফ্রান্সিসকো পিজারোর ছোট ভাই গঞ্জালো পিজারো (Gonzalo pizarro) । গঞ্জালো তাঁর দলবল নিয়ে রওনা দিলেন পূর্বদিকে । কিন্তু কিছুদূর যাবার পরই তাঁদের জাহাজের খাবার গেল ফুরিয়ে । খাবার যোগাড় করতে না পারলে বিপদ হবে । তাই তিনি একটি বড় নৌকায় কয়েকজন লোক তুলে দিয়ে বললেন , যাও তোমরা আশপাশের গ্রাম থেকে কিছু খাবার সংগ্রহ করে আনতে পার কিনা দেখ । এই ক্ষুদ্র দলের নেতা ছিলেন ফ্রান্সিসকো ডি ওরেল্লানা (Francisoco-De-orellana ) । তার সাথে ছিল প্রায় আরো জনা ৫০ লোক । এই দল নিয়ে ওরেল্লানা বের হলেন খাবারের খোঁজে । কিন্তু নদীপথ ধরে কিছু দূর যাবার পরই নদীর প্রবল স্রোতে তাদের নৌকা ডিগবাজি খেতে শুরু করল । নৌকা নিয়ন্ত্রন হারিয়ে স্রোতের টানে ভেসে চলল । ওরা সবাই ভাগ্যের হাতে নিজেদেরকে সঁপে অসহায়ের মতো বসে রইল নৌকায় ।
কয়েকদিন অনিশ্চিতি এবং উত্কণ্ঠার মধ্যদিয়ে কাটার পর অবশেষে তারা উপজাতিদের একটি গ্রামে এস পৌঁছাল । সেখানে তারা উপজাতিদের কাছ থেকে প্রচুর খাদ্যশস্য সংগ্রহ করে নিয়ে নৌকার গতি নিয়ন্ত্রণ করে স্রোতের টানে চলতে থাকে ।
খরস্রোতা নদী । নদীর দুপাশে ঘন জঙ্গল । একেবার গহীন অরণ্য । সেই জঙ্গশ পথে এগুতে গিয়েই সহসা বিপদ ঘটে । তাদের আক্রমন করে বসল প্রায় ২০০০(অভিযাত্রীদের ভাষায়) স্থানীয় লোকের একটি দশ । তীর , লাঠি আর বর্শা নিয়ে তাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল । কিন্তু এদের কাছে ছিল বন্দুক । তীর ধনুক নিয়ে উপজাতি দস্যুরা বেশি সুবিধা করতে পারল না । অনেকে মারা পড়ল । শেষে যুদ্ধে এঁটে উঠতে না পেরে পালিয়ে গেল দস্যুরা । দস্যুদের পরাজিত করে ওরা আবার এগিয়ে যেতে লাগল পূর্বদিকে । কিন্তু কিছু দূর যাবার পরই আবার ঘনিয়ে এল আরেক চরম বিপদ ।
এরা যেতে যেতেআমাজনের গহীনে এমন এক এলাকায় পৌঁছাল ,যে এলাকায় বাস করে একদল মানুষ এবং সব সময় সংরক্ষিত রাখে তাদের এলাকা । দূরভাগ্য বসত অভিযাত্রীরা তাদের এলাকায় অনাহূতের মত প্রবেশ করল ।
ফলে যা হওয়ার তাই হলো । এবারও একদল মানুষ তাদের আক্রমণ করে বসল । তবে মজার ঘটনা হলো এঁরা ছিল মেয়ে 'দস্যু'(অভিযাত্রীদের ভাষায় ) !! একদল মেয়ে ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকা (ক্যানু -canoe) নিয়ে চারদিক থেকে তাদের বড় নৌকাটিকে ঘিরে ধরল ।
মেয়ে দস্যুদের প্রত্যেকের মাথায় ছিল বিচিত্র গঠনের খোলা এবং হলুদ রঙ রাঙানো চুল । কালো শরীর , কিন্তূ কাদা মাটি মাখা হলুদ রঙের চুল । বিচিত্র এবং ভয়ংকর রূপ । প্রত্যেকের হাতে ছিল তীর ধনুক । কিন্তু মেয়ে দস্যূদের চেহারাই শুধু ভয়ংকর ছিল না । তাদের দক্ষতা
এবং সাহসও ছিল প্রচুর । তারা চারদিক থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে তীর ছুঁড়ে মারতে লাগল ওরেল্লার নৌকা লক্ষ করে ।
মেয়ে দস্যুদের তীরের আঘাতে ওরেল্লানার দশজন সঙ্গী মারা পড়ল । দুর্ঘনার পরই ওরেল্লানা এই ভয়ঙ্কর নদীটির নাম দিলেন আমাজন (AMAZON) । স্থানীয় ভাষায় আমাজন শব্দের অর্থ হল →"নারী দস্যুদেয় অভিযান !"
যাহোক এই ক্ষতির পরও ওরেল্লানা প্রায় ৬৪০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে অবশেষে এস পৌঁছালেন আমাজনের মোহনায় । তিনি পশ্চিম থেকে রওনা দিয়ে নদীপথ বেয়েই এসে পড়লেন আটলান্টিক মহাসাগরে । নদী পথে এটাই হলো প্রথম পশ্চিম থেকে পূর্বে দক্ষিণ আমারিকা পাড়ি দেয়া ।
তারপর থেকেই ওরেল্লানার দেয়া নামেই এই ভয়ংকর সুন্দর নদীর নাম রাখা হয় আমাজন ।
পরবর্তীতে কয়েকশো বছর পর আমারিকার ওয়ারর্নার বোস কোম্পানি(WB) আমাজন নারী যোদ্ধা থেকে তৈরি করলো একটি জনপ্রিয় টিভি সিরিজ "WONDER WOMAN" ।এই চরিত্রটি নিয়ে অনেক মুভি , সিরিজ এবং কার্টুন তৈরি হয়েছে ।
আমাজন নারী যোদ্ধাদের নিয়েও আছে চমত্কার সব ঘটনা ।অন্য একদিন বলবো সে সব । ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের সাথে থাকুন ।
বনের আবহাওয়া, প্রাণিকুল, বৈচিত্র....
আমাজনকে রেইনফরেস্ট (The Amazon rainforest) বলা হলেও এর অর্থ কিন্তু এই না যে এখানে সারা বছর বৃষ্টিপাত হয়। বরং রেইনফরেস্ট বলা হয় এখানকার অত্যধিক আর্দ্রতা, বৃষ্টিপাত (বর্ষা মৌসুমে) এবং গরম আবহাওয়ার কারনে। প্রচন্ড গরমের কারনে এখানে বাষ্পীভবনের হার অনেক বেশি যা আর্দ্রতা এবং বৃষ্টিপাত বেশি হওয়ার অন্যতম কারন।
এই গরম আবহাওয়া, বৃষ্টিপাত এবং আর্দ্রতার কারনে এ বনে উদ্ভিদ ও প্রানিকুলের বৈচিত্রময় সমাহার দেখা যায়। এখানে আছে ১২০ ফুট উঁচু গাছ, ৪০ হাজার প্রজাতির উদ্ভিদ, ২.৫ মিলিয়ন প্রজাতির কীট-পতঙ্গ, ১,২৯৪ প্রজাতির পাখি, ৩৭৮ প্রজাতির সরীসৃপ, ৪২৮ প্রজাতির উভচর এবং ৪২৭ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রানি সহ হাজারো প্রজাতির অজানা জীব-অনুজীব। এখানকার প্রানিবৈচিত্র অতুলনীয়। মজার বিষয় হল হাজারো রকমের প্রানির সমাহার থাকলেও এখানকার ইকোসিস্টেম অত্যন্ত শক্তিশালী যা মিলিয়ন বছর ধরে টিকে আছে।
স্তন্যপায়ীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল জাগুয়ার, গোলাপি ডলফিন (একমাত্র প্রজাতির ডলফিন যা স্বাদু পানিতে বাস করে), তামানডুয়া (Tamandua), তাপির (Tapir), মানাতি (Manatee), ইঁদুর, কাঠবিড়ালি, বাদুড় ইত্যাদি।
জাগুয়ার
গোলাপি ডলফিন
তামানডুয়া (Tamandua)
তাপির
মানাতি (Manatee)
পাখিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ঈগল (harpy eagle), টুকান (Toucan), হোয়াটজিন (Hoatzin), দ্রুতগামী হামিং বার্ড (Humming Bird) এবং আরো রঙ-বেরঙের অনেক পাখি।
টুকান (Toucan)
হোয়াটজিন (Hoatzin)
হামিং বার্ড
সরীসৃপের মধ্যে আছে বিখ্যাত সাপ বোয়া যা তার শিকারকে পেঁচিয়ে ধরে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলে। তাছাড়া রয়েছে কুমির, অ্যালিগেটর, কচ্ছপ প্রভৃতি।
বোয়া
অ্যানাকোন্ডা
অ্যালিগেটর
উভচর প্রানির মধ্যে লাল চোখ বিশিষ্ট গেছো ব্যাঙের নাম না বললেই নয়--
গেছো ব্যাঙ
মাছের মধ্যে আছে মাংসাশী লাল পিরানহা, বিপদজনক বৈদ্যুতিক মাছ (Electric Eel) এবং স্বাদু পানির অন্যতম বড় মাছ--পিরারুকু (Pirarucu); যার ওজন ১৫০ কেজি পর্যন্ত হতে পারে।
লাল পিরানহা
বৈদ্যুতিক মাছ (Electric Eel)
পিরারুকু (Pirarucu)
এছাড়াও বিভিন্ন প্রজাতির পিঁপড়া, হাতের তালুর সমান বড় তেলাপোকা, রঙ-বেরঙের প্রজাপতি, শুঁয়োপোকা আর জানা অজানা হরেক রকমের পোকা-মাকড়ের বসতি এই আমাজনে।
নীল প্রজাপতি
তবে এ বন শুধু জীবজন্তু আর উদ্ভিদের জন্যই স্বর্গরাজ্য নয় বরং এখানে অনেক মনুষ্য বসতিও আছে। হাজার বছর ধরে এখানে আদি ইনডিয়ানরা বসবাস করে আসছে। বর্তমানে এখানে বসবাসরত ইনডিয়ানের সংখ্য প্রায় ২ লাখ।
বিভিন্ন জীবের পাশাপশি কিছু ক্ষতিকর প্রানিও আছে আমাজনে। তাদের মধ্যে পিরানহা, রক্তচোষা বাদুর, বিষাক্ত ব্যাঙ, বৈদ্যুতিক মাছ, রেবিস, ম্যালেরিয়া, ইয়েলো ফিভার, ডেঙ্গু ফিভারের জীবানু উল্লেখযোগ্য। তাছাড়া জাগুয়ার এবং অ্যানাকোন্ডা-ও অনেক সময় বিপদের কারন হতে পারে।
আমাজন বনের কিছু বিস্ময়কর তথ্যঃ
১। বিশ্বের নিরক্ষীয় বনের অর্ধেকের বেশি অঞ্চল এই আমাজনে
২। প্রানিকুলের সনাক্তকৃত এক দশমাংশ প্রাণী এই অঞ্চলে বাস করে।
৩। প্রথিবীর সকল পাখির এক পঞ্চমাংশ পাখি এই বনের অধিবাসী।
৪। গড়ে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে প্রায় ৭৫,০০০ ধরনের বৃক্ষ পাওয়া যায়।
৫। বিশ্বের মোট ঔষধের ২৫% কাঁচামাল আসে এ বনের মাত্র ৪০০ প্রজাতির গাছ থেকে।
৬। পেরুর একটি মাত্র গাছে ৪৩ প্রজাতির পিঁপড়ার সন্ধান পাওয়া গেছে যা সমগ্র গ্রেট ব্রিটেনের চেয়ে বেশি।
আমাজন নদ
আমাজন বেসিনে অবস্থিত এ নদী হল আয়তনের দিক দিয়ে পৃথিবীর সবচে বড় নদী এবং নীল নদের পরে দ্বিতীয় দীর্ঘতম নদী। এর প্রায় ১,১০০টি উপনদী আছে যার মধ্যে ১৭টির দৈর্ঘ্য ১০০০ মাইলের বেশি। এ নদী আমাজন অঞ্চলের প্রানবৈচিত্রের প্রধান উৎস এবং হাজার বছর ধরে গড়ে ওঠা এ জঙ্গলের সুতিকাগার।
এ নদীর কয়েকটি বিস্ময়কর তথ্যঃ
১। এ নদীর আয়তন আমেরিকার সবচে বড় নদী মিসিসিপির আয়তনের ১১ গুন।
২। বর্ষা মৌসুমে এ নদীর মুখ (আটলান্টিকের সাথে যেখানে মিলিত হয়) প্রায় ৩০০ মাইল চওড়া থাকে।
৩। বর্ষা মৌসুমে এ নদীর মোহনা দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে ৫,৭৮৭,০৩৭ ঘনফুট পানি আটলান্টিকে নিক্ষিপ্ত হয়।
৪। আমাজন নদী থেকে যে পরিমান পানি প্রতি দিনে আটলান্টিকে প্রবেশ করে তা দিয়ে পুরো নিউইয়র্ক শহরের ৯ বছরের পানির চাহিদা মেটানো সম্ভব।
৫। এ নদীর পানি প্রবাহের গতি এত বেশি যে আটলান্টিকে প্রবেশের পর তা লোনা পানির সাথে মেশার আগেই সমুদ্রের বুকে ১২৫ মাইল দুরত্ব অতিক্রম করে।
৬। প্রতিদিন ১০৬ মিলিয়ন ঘনফুট পলিমাটি আমাজনের পানির সাথে আটলান্টিকে গিয়ে পড়ছে।
৭। পৃথিবীর মোট স্বাদু পানির এক পঞ্চমাংশ স্বাদু পানি আসে আমাজন নদী থেকে।
৮/সারা পৃথিবীতে যে পরিমাণ মিটা পানির মাছ আছে তার শতকরা ৮০ ভাগ মাছই আছে আমাজন নদীতে !
৯/সারা যুক্তরাষ্ট্রে যত শহর আছে তার সব পৌর এলাকায় প্রতিদিন যে পরিমাণ পানি সরবরাহ করা হয় , তার ২০০ গুণ পরিমাণ পানি প্রতিদিন প্রবাহিত হয় আমাজন নদী দিয়ে !
১০/যদি এক গ্লাস জলকে এনলার্জ করা হয় এবং এর সাইজ যদি পৃথিবীর সমান হয় , তবে জলের প্রতিটি অণুর (Molecule ) আকার হবে এক একটি কমলা লেবুর সমান !
১১/পৃথিবীর বৃহত্তম নদী আমাজনের বার্ষিক জল প্রবাহের পরিমাণ গড়ে ৪২০০০০০ কিউসেক । এই প্রবাহ বর্ষার মৌসুমে বেড়ে ৭০০০০০০ কিউসেক পর্যন্ত হয় ! নদীটির গড় গভীরতা ৯০ মিটার (৩০০ ফুট) ।
১২/বিজ্ঞানীরা বলেন , সারা পৃথিবীতে যে পরিমাণ মিষ্টি জল আছে তার শতকরা ২৫ ভাগ আছে আমাজন নদীতে !
১৩/পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে যে অক্সিজেন আছে তার শতকরা ৪০ ভাগ অক্সিজেন তৈরি হয় আমাজন নদীর বনাঞ্চলের উদ্ভিদের দ্বারা !
১৪/এই নদীটি এতো বিপুল পরিমাণ জল আটলান্টিকে ঢালে যে মোহনা থেকে সাগরের ভিতর
শেষকথাঃ
আমাজন হল বিশাল এবং জটিল এক জায়গা যেখানে প্রকৃতি তৈরি করেছে অদ্বিতীয় এক ভৌগলিক ও জৈবিক সমন্বয় যা পৃথিবীর অন্য কোথাও অনুপস্থিত। আমাজনের রহস্য এবং ভয় আমাদের একই সাথে জয় করতে হবে এবং সাথে সাথে জিইয়ে রাখতে হবে। নতুবা বিশ্বায়নের এই যুগে আমাজনের রহস্য নিয়ে আমরা হয়ত আর বেশিদিন গর্ব করতে পারব না।