পৃষ্ঠাসমূহ

WordLinx - Get 
Paid To Click

মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১১

ফোনে একদিন (Do Not Phone Call When You Drive)


http://images.amazon.com/images/P/0810954796.01.LZZZZZZZ.jpg
ফোনে একদিন

সোহানা ক্লাস থেকে বেরুতেই মোবাইলটা বেজে উঠল। ফোনে কথা বলতে তার কখনই বিরক্ত লাগে না। আর তা যদি হয় বিন্তির সঙ্গে তাহলে তো কথাই নেই। বিন্তি সোহানার সবচেয়ে ক্লোজ ফ্রেন্ড। এখন বিন্তিই ফোন করেছে। সে কলটা রিসিভ করল, 'আরে দোস্ত, খবর কী? আজ ক্লাসে এলি না যে?' বিন্তি বলল, 'আর বলিস না। সেই রাত থেকেই শরীরটা গরম গরম লাগছিল। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি গায়ে পুরোদস্তুর জ্বর। তাই ক্লাসে এলাম না। আজ ক্লাসে কী পড়াল?' সোহানা হেসে বলল, 'এখনও জ্বর, পেটব্যথা বলে ক্লাস ফাঁকি দেওয়ার অভ্যাসটা গেল না! যা হোক, আসিসনি ভালো করেছিস। আজ মিজান স্যার ক্লাসে পড়ানো বাদ দিয়ে শুধু গল্প করেছেন। আমার বিরক্ত লাগছিল কিন্তু অন্যরা খুব এনজয় করছিল।' বিন্তি সোহানার সঙ্গে একমত হলো, 'মিজান স্যার ক্লাসে এলে কোনো পড়াই হয় না। শুধু গল্প করে।' সোহানা হেসে বলল, 'আজ ক্লাসে কী হয়েছে শোন, মিজান স্যার তখন বকবক করছিলেন। হঠাৎ প্রিন্সিপাল ম্যাডাম দরজার সামনে এসে দাঁড়ালেন। ম্যাডামকে দেখে মিজান স্যার গল্প বন্ধ করে এমন ভাব করলেন যে, তিনি পড়াচ্ছেন। সবাই স্যারের চেহারা দেখে গম্ভীর হয়ে গেল; কিন্তু পেছনের বেঞ্চে বলে সোহেল আছে না, সে ফিক করে হেসে ফেলল। ম্যাডাম চলে যাওয়ার পর তাই সোহেলের ওপর স্যারের সে কী রাগ! ওদিকে আমরাও হেসে খুন।' সোহানার কথা শুনে বিন্তিও হো হো করে হেসে ফেলল। হাসি থামলে বিন্তি সোহানাকে জিজ্ঞেস করল, 'আশপাশে খুব শব্দ শুনতে পাচ্ছি। কোথাও যাচ্ছিস না কী?' সোহানা জবাব দিল, 'কোচিংয়ে যাচ্ছি। প্রায় চলে এসেছি। রাস্তাটা পার হলেই হলো।' বিন্তি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল, 'আজ আবার কিসের কোচিং? তোর না রবি, মঙ্গল, বৃহস্পতিবার কোচিং থাকে? আজ তো সোমবার।' সোহানা বিরক্ত হয়ে বলল, 'স্যার ফোন দিয়ে বলেছিল আগামীকাল স্যার কী এক কাজে বাইরে যাবে। তাই সেই ক্লাসটা হবে না। সেটা আজ করাবে। তাই যাচ্ছি।' বিন্তি বলল, 'আচ্ছা ঠিক আছে। তাহলে ক্লাস শেষ করে বাসায় আসিস। আম্মা আজ খুব মজার একটা মেন্যু রান্না করেছে। তোর জন্য রেখেছে। তুই এলে...।'
বিন্তি কথা শেষ করতে পারল না। তার আগেই লাইন কেটে গেল। বিন্তি মনে মনে ভাবল, 'মনে হয় ব্যালেন্স শেষ হয়ে গেছে।' তাই সে সোহানার মোবাইলে ট্রাই করল কিন্তু মোবাইল বন্ধ। তখন সে ধরে নিল নিশ্চয়ই চার্য শেষ হয়ে গেছে। বিন্তি নিশ্চিন্ত মনে ফোন রেখে দিল।
পরিশেষে সন্ধ্যার একটু আগে বিন্তির কাছে খবর এসেছে যে রাস্তা পার হতে গিয়ে সোহানা দুর্ঘটনায় মারা গেছে। প্রত্যক্ষদর্শী একজন জানিয়েছেন যে, মোবাইলে কথা বলতে বলতে সোহানা রাস্তা পার হচ্ছিল বলে গাড়িটা সে খেয়ালই করেনি।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Share

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More