পৃষ্ঠাসমূহ

WordLinx - Get 
Paid To Click

শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১১

২০১১ সালের মনে দাগ কেটে যাওয়া কিছু ঘটনা (some miserable moment 2011)


ঘটনা এক


ফেইসবুকে হঠাৎ করে উপরের ছবিটা দেখি। ছবিটা দেখে মনটা খারাপ হয়ে গেল। ভাবলাম মানুষগুলা এরকমভাবে বাচ্চা দুটিকে মারছে কেন? তাই এর পিছনের খবর জানতে খুঁজ লাগালাম, সেটা খুজতে গিয়ে জানলাম ছবির শিশু দুটি কোন এক গৃহস্থের রান্নাঘর থেকে ভাত চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ে। ধরা পড়ার পর জনতা তাদের মারধোর করে। ঘটনাটা ঘটেছে ঢাকার লালবাঘ এলাকায়। এ কেমন সমাজ যেখানে শিশুদের ভাত চুরি করতে হয়?? আবার সেই ক্ষুধার্ত শিশুকে ভাত চুরির দায়ে গণধোলাইয়ের স্বীকার হতে হয়???



ঘটনা দুই


উপরের ছবিটি নিশ্চয় চিনতে পারছেন। এটা কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার বানারভিটা গ্রামের নূর ইসলাম নূরুর বড় মেয়ে ফেলানীর ছবি। যে গত ৭ জানুয়ারি ভোরে কুড়িগ্রামের অনন্তপুর সীমান্ত পার হয়ে দেশে ফেরার সময় কাঁটাতারের বেড়ায় কাপড় আটকে যায়, আটকে যাওয়ার পর সে চিৎকার দিলে, বিএসএফ সদস্যরা তাকে গুলি করে হত্যা করে এবং লাশ এরকম কাঁটাতারে ঝুলে থাকে। পরিবার পরিজন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভারতের আসাম রাজ্যে বনগাইগাঁও টুনিয়াপাড়া বস্তিতে বসবাস করা ১৪ বছরের ফেলানি বাড়িতে ফিরছিল বিয়ের পিঁড়িতে বসবে বলে। কিন্তু লাল শাড়ি পরে শ্বশুরবাড়ি আর যাওয়া হলো না ফেলানির, লাল জামা পরে লাশ হয়ে ঝুলে থাকতে হল কাঁটাতারের জালে। এরপর এই ইস্যু নিয়ে দেশে বিদেশে অনেক লেখালেখি, প্রতিবাদ , মানববন্ধন হয়েছে । কিন্তু ভারতের দুঃখ প্রকাশ ছাড়া আমাদের কন প্রাপ্তি ছিল না । সীমান্তে নিরীহ মানুষ হত্যার ব্যাপারে সরকার ও মানবাধিকার কমিশন কী কোন পদক্ষেপ নিয়েছে?




ঘটনা তিন


উপরের ছবিটি হল দরীদ্র নিরীহ কলেজ ছাত্র লিমনের। যে গত মার্চমাসে ঝালকাটিতে এক তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীকে ধরতে গিয়ে রেবের গুলিতে আহত হয়। আহত হয়ার পর লিমনকে নিয়ে অনেক লেখালেখি, কান্নাকাটি, মানবন্ধন হয়েছে। কিন্তু কোন কিছুই লিমনের পা বাঁচাতে পারেনি , লিমনকে জেলে যাওয়া থেকে বাচাতে পারেনি। । পড়ুন নিষ্ঠুরতার এক চরম নমুনা আর লিমনের নিজের মুখে শুনুন পুরা ঘটনা বর্ণনা। এতকিছুর পরেও লিমনের কৃত্রিম পা সংযোজন করলেও যে বা যারা এরকম একটা চরম অন্যায় কাজ করল তাদের বিরুদ্ধে কি কোন একশন নেয়া হয়েছে ?



ঘটনা চার


উপরের ছবিটি মিরসরাই মর্মান্তিক ট্রাজেডির, যা কখনো ভুলবার নয়। মিরসরাই সদর উপজেলা মাঠে বন্ধবন্ধু গোল্ডকাপ টুর্নামেন্টের একটি খেলা দেখে ফেরার পথে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দুঃখ জনক ও মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটে। যেখানে ৪৫ জন নিস্পাপ ছাত্র সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিল । গাড়িটি চালাচ্ছিল চালকের সহকারী এবং গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ফোনে কথা বলছিল। গাড়ির গতি ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। একপর্যায়ে ট্রাকটি ব্রিজ থেকে নামার সময় উল্টো দিক থেকে আসা একটি গাড়িকে সাইড দিতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাশের ডোবায় পড়ে যায়। যাক কিছুটা হলেও আশা বানী হল সেই লাইসেন্সবিহীন চালকের ৫ বছরের কারাদন্ড হয়েছে



ঘটনা পাঁচ


উপরের ছবিটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র আব্দুল কাদেরের। গত জুলাই মাসে রাতে ইস্কাটনের এক আত্মীয়ের বাসায় অবস্থানরত মা ও বোনের সঙ্গে দেখা করে ফেরার পথে শুধুমাত্র সন্দেহের বশবর্তী হয়ে ডাকাতির মিথ্যা অভিযোগে পুলিশ তাকে আটক করে। কারাগারে নিয়ে নির্যাতনের এক পর্যায়ে পুলিশ চাপাতি দিয়ে কাদেরের বাম পা জখম করে এবং তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়। এরপর যখন এর বিরুদ্ধে চারদিকে আওউয়াজ উঠল তখন পুলিশ ব্যস্ত হয়ে উঠল তাকে ডাকাত প্রমান করতে। কিন্তু তারা সেটা পারেনি। অবশেষে কাদের মুক্তি পান মুক্তি পেয়েই পুলিশের নিষ্ঠুরতার বিচার চাইলেন কাদের। সেই পরিপেক্ষতে তিন পুলিশকে বরখাস্তের নির্দেশ দেয়া হয়।



ঘটনা ছয়


উপরের ছবিটি দেখে কি মনে হয় সে ছেলেটা ডাকাত হতে পারে?! নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের এই নিরীহ গরিব নিরপরাধ অসহায় ষোল বছরের ছেলে সামছুদ্দিন মিলনকে ডাকাত বানিয়ে গণধোলাইয়ের মাধ্যমে কোম্পানীগঞ্জ থানার পুলিশ হত্যা করে। অথচ সে তারপ্রেমিকার সাথে দেখা করতে গিয়েছিল । সে প্রেমিকা আবার তার খালাত বোন। মিলনের এই ভিডিও ফেইসবুকে দেখেছিলাম দেখে হতবাক ও বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলাম।

দুর্বল হার্টের কেউ ভিডিওটা দেখবেন না।



এই বিষয়ে নিউজ দেখতে পারবেন সেদিন আসলে কি হয়েছিল





ঘটনা সাত


উপরের ছবিটি গত শবেবরাত রাতে ঢাকার আমিন বাজারে গণপিটুনিতে মারা যাওয়া ছয় ছাত্রের ছবি।আমিনবাজারে গণপিটুনিতে ছয় ছাত্র নিহত খবরটা পড়ার পর মনে হয়েছিল মানুষ আর মানুষ নাই, পশু হয়ে গেছে। পশুরাও এরকম হিংস্র কাজ করতে পারবে বলে মনে হয় না। আবারও ডাকাত সন্দেহে ছয় নিরীহ ছাত্রকে মেরে ফেলা হল।




ঘটনা আট
4444abid
উপরের ছবিটা ক্লোজআপ তারকা আবিদের যে পাগলা হাওয়ার বাদল দিনে- গানটি গেয়ে ২০০৫-এ হয়েছিলেন ক্লোজআপ তারকার ১০ জনের একজন। সাগরে ডুবে ক্লোজআপ তারকা আবিদসহ দুজনের মৃত্যু খবরটা শুনে বুকটা ধক করে উঠেছিল। তার পর পর দু’টি অ্যালবাম বেরিয়েছিল, তৃতীয় অ্যালবামের কাজও করেছিলেন । কিন্তু অ্যালবামের প্রকাশ দেখে যাওয়া হলো না আবিদের। সমুদ্র তাকে তেনে নিয়ে গেল না ফেরার দেশে।
আবিদের ক্লোজ আপ ওয়ানে গাওয়া একটা গান



ঘটনা নয়


উপরের হাস্যজ্জল চেহারার মানুষটি হলেন দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বর্তমানেইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায় এমএস ও পিএইচডিরত রুমানা মনজুর। যার আর এরকম হাস্যজ্জল চেহারা আর নেই। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা প্রকৌশলী স্বামী হাসান সাইদের পাশবিক নির্যাতনের স্বীকার হয়ে হারিয়েছেন চোখ এবং ক্ষত বিক্ষত হয়ে গেছে তার চেহারা। এই ঘটনায় তার স্বামী হাসান সাইদকে গ্রেপ্তার করা হয় । কিন্তু বিচারের আগেই সে জেলের মধ্যে মারা যায়
ঘটনা দশ


উপরের ছবিটি একজন মুক্তিযুদ্ধে শহীদের স্ত্রীর, নাম নাসেরা বেগম। যিনি রাস্তায় ঘুরে ঘুরে কলম বিক্রির জীবন চালান। তার এই বেহাল জীবন দেখে কিছু মানুষ তাকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসে,সে উপলক্ষে একটা ব্লগে নাসেরা বেগমকে নিয়ে একটা পোস্ট স্টিকিও করা হয়। সেই পোস্ট স্টিকি করার পর ভাল একটা সাড়া পাওয়া যায়। কিন্তু এর কিছুদিন পর
জানা যায় চরম এক প্রতারনার খবর, কলম দাদিকে সাহায্যের উছিলায় যে টাকা তুলা হয় সে টাকা কে বা কাহারা উনাকে না দিয়ে নিজেরা মেরে দেয়। এক পত্রিকায় জানা যায় টাকার পরিমান ১৪ লাখ টাকা ।
ব্লগারদের সাথে ঠিক একি রকম একটা প্রতারনা করে ব্লগার হাসনা হেনা এবং তার স্ত্রী ব্লগার রোজলীন
সবাইকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা । হেপি নিউ ইয়ার ২০১২।

পোস্ট টি লিখেছেন মাসুম আহমদ

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Share

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More